এত গরমের গূঢ় রহস্য উদঘাটন করল বিজ্ঞানী বল্টু!

 এত গরমের গূঢ় রহস্য উদঘাটন করল বিজ্ঞানী বল্টু!

- পূর্ণেন্দু ফাদিকার


গতকাল পাড়ার রকে বসে হারুদার সাথে আলোচনা করছিলাম যে এত গরম পড়ার কারণ কি কি?


অনেকগুলো কারণ উঠে এলো, কিছু স্বল্প মেয়াদী বা সাময়িক কারণ কিছু দীর্ঘমেয়াদী কারণ।


কারণগুলি পরপর নিচে পয়েন্ট আকারে দিচ্ছে।


সাময়িক কারণঃ


1) প্রতি 7 থেকে 9 বছর ছাড়া ছাড়া সাধারণ থেকে তীব্র বিভিন্ন পর্যায়ে এল নিনো এর প্রভাব ঘটে। 2023 সালে ভারতে এল নিনো সর্বোচ্চ প্রভাব হবে মনে করলেও তেমন প্রভাব বিস্তার লাভ করে নি। সেই কারনেই অনেক বিজ্ঞানী 2024 ভারতে প্রচণ্ড গ্রীষ্মের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন৷ তাদের মতে জুন পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা যেতে পারে।


2) বছরের এই সময় সাধারণত বঙ্গোপসাগরে একটি উচ্চচাপ বলয় বাংলার উপকূল লাগোয়া অ‍ঞ্চলে অবস্থান। তার জেরে জলীয় বাষ্প প্রবেশ করে গাঙ্গেয় লাগোয়া জেলাগুলিতে। তাই মানুষের ঘাম হলেও প্রচন্ড শুকনো গরম তেমন অনুভব হয় না। তাপমাত্রাও 40 ডিগ্রি খুব কম সময়েই পার করে। এই বছর উচ্চচাপ বলয়টি অবস্থান পরিবর্তন করেছে। ফলস্বরূপ পশ্চিমদিক থেকে শুকনো গরম বাতাস পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে। এর জন্যই চড়চড়িয়ে বাড়ছে থাকে তাপমাত্রা। অনেক জায়গায় তাপমাত্রা 42 থেকে 43 ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে।


দীর্ঘমেয়াদী কারণঃ

1) পরিকল্পনা হীন নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। জঙ্গল পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে। যতটা জঙ্গল দরকার তার থেকে অনেক কম শতাংশ জঙ্গল রয়েছে। আর যেটুকু রয়েছে সেগুলোও কেটে ফেলা হচ্ছে।


2) পুকুর জলাভূমি প্রভৃতি বুঝিয়ে তথাকথিত নগরায়ন চলছে। কলকাতার আশেপাশে এককালে প্রচুর ভেড়ী ছিল যেগুলো কলকাতার ফুসফুস। সেসব অনেক ভেড়ী এখন অবলুপ্ত।


3) পরিকল্পনাহীন এবং ভারসাম্যহীন ইকো সিস্টেম তৈরি হচ্ছে।


4) আন্ডারওয়াটার জল নির্বিচারে তুলে নিয়ে ভূগর্ভে জলের স্তরের এবং ইকো সিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট করছে। 


5) আরেকটা সবথেকে বড় কথা মানুষের এখন সহ্যগুণ খুব কমে গেছে। বেসিক্যালি মানুষ এখন ভীষণ আরাম প্রিয় হয়ে উঠেছে। কমফোর্ট জোনের বাইরে কিছু ঘটলেই চারিদিকে হৈ হৈ রব উঠে যায়। গরম হলেই মানুষজন আলোচনা শুরু করে দেয় এত গরম কেন? বৃষ্টি হলে আলোচনা করে এত বৃষ্টি কেন? শীত পড়লে আলোচনা করে এত শীত কেন? আসলে সবগুলোই প্রাকৃতিক নিয়মে ঘটবে এবং ঘটে চলবে!


এই পর্যন্ত তো আলোচনা ঠিক ছিল সবই বোঝা যাচ্ছে কিন্তু এর মাঝে পাড়ার সবজান্তা বল্টু এসে হাজির। সে বলল,


- তোমরা কি আসল কারণ জানো? এত গরম কেন পড়েছে?


- তুই কি কারণ জানিস? সেটা আমাদের বল।


- এইসবের পেছনে আসল কারণ হচ্ছে ইসরোর অবদান।


( কিছুটা অবাক হয়ে, প্রায় ভিরমি খেয়ে জিজ্ঞেস করলাম)


- ইসরো!! ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বল দেখি।


- আরে তোমরা জানো না! ইসরো একটা আদিত্য বলে মহাকাশ যান সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করতে পাঠিয়েছে। আদিত্য যতই সূর্যের কাছে যাচ্ছে, ততই সূর্য একটু বেশি করে চোখ মেলে দেখছে, যে ওর দিকে কে ধেয়ে আসছে। আর ফলেই তো গরম বেড়ে যাচ্ছে।


আমি আর হারুদা দুজনে মিলে আলোচনা করেছি যে নোবেল কমিটির কাছে বল্টুর নাম প্রস্তাব করবো। এইরকম ইউনিক ইনোভেশন মনে হয় কেউ আগে করেনি। সত্যি কলকাতার রকের আড্ডা গুলোকে মানুষজন এবং নোবেল কমিটি আন্ডারএস্টিমেট করে গেল। কত রকম প্রতিভা যে এইসব জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায় তা নিয়ে একটা সমীক্ষা হওয়া দরকার। 

😄😄


(সমাপ্ত)


★ সঙ্গের ছবিটি ইসরোর মহাকাশযান আদিত্য L1 থেকে তোলা সূর্য এর ছবি।



19.04.2024

Thanks for contact me

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post